অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার উত্তরপাড়ার মৃত ফাজিল আকন্দের স্ত্রী পচি বেওয়া (বর্তমানে মৃত)। ওইসময় পিতৃপরিচয়হীন ভূমিষ্ঠ হন মেরিনা খাতুন (৫১)। এরপর থেকেই সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছেন দিনের পর দিন। সমাজের অনেকেই তাকে গালমন্দ করতেন।
সেই মেরিনা দেশে প্রথমবারের মতো ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছেন। মেরিনা খাতুন তাড়াশ উপজেলার ওয়াপদা বাঁধ এলাকার ওমর আলীর স্ত্রী।
গত ৯ জানুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) থেকে মহাপরিচালক জহুরুল ইসলাম রোহেলের সই করা এক পত্রের মাধ্যমে মেরিনা খাতুনকে ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে মেরিনা খাতুনের স্বামী ওমর আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বীরাঙ্গনা পচি বেওয়ার (বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত) কন্যা মেরিনা খাতুনকে ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য গতবছরের ৮ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮২তম সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বিষয়টি উত্থাপন করলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ বিষয়ে মেরিনা খাতুন বলেন, ‘সরকার আমাকে স্বীকৃতি দেবে। সেই সিদ্ধান্তের চিঠি ডাক অফিসের মাধ্যমে হাতে পেয়েছি। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আমি ও আমার পরিবার আনন্দিত।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্থানীয় রাজাকাররা তাড়াশের উত্তরপাড়ার মৃত ফাজিল আকন্দের স্ত্রী পচি বেওয়াকে (বর্তমানে মৃত) তার বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় পাক বাহিনীর সামরিক ক্যাম্পে। সেখানে তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পাক হানাদার বাহিনীর পাশবিক নির্যাতনের ফলে জন্ম হয় মেরিনা খাতুনের।
মেরিনার মা পচি বেওয়া দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর ২০১৮ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়ে গেজেটভুক্ত হয়েছিলেন।
Leave a Reply